১৬ জুলাই ২০১৯ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনসে নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ লাইনসে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।
তিনি জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী মিন্নি। তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনসে আনা হয়েছে। তবে তাকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানান তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনসে আনার সময় মিন্নির সঙ্গে ছিলেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন। মোবাইল ফোনে পুলিশ লাইন থেকে তিনি জানান, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক অভিযুক্তকে শনাক্ত করার জন্য মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ লাইনসে আনা হয়েছে। শনাক্তকরণ শেষ হলে মিন্নিকে আবার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। পরদিন এই ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা করেন।
ইতোমধ্যে মামলার বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততা ছিল এমন দাবি করে গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘রিফাত হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা মিন্নি। নয়নের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়ের কথা গোপন রেখে রিফাতের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে দেয় তার পরিবার। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নি জড়িত রয়েছে।’সেজন্য মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তবে শ্বশুরের এমন দাবি অস্বীকার করেন মিন্নি। গত রবিবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মিন্নি বলেছিলেন, রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ক্ষমতাবান ও বিত্তবানদের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে এমন কথা বলেছেন। মিন্নি বলেছিলেন, আমার শ্বশুর অসুস্থ এবং তিনি তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি যখন যা বলেন তা কোনো কিছুই পরে মনে থাকে না। আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করেছে। তারা আমার ছবি এডিট করে নয়ন বন্ডের সঙ্গে যুক্ত করে পোস্ট করেছে। ০০৭ নামের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটি যারা সৃষ্টি করেছে তারা খুবই ক্ষমতাবান এবং বিত্তবান। তারা এ বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আমার শ্বশুরকে সংবাদ সম্মেলন করাতে বাধ্য করেছেন।’
Leave a Reply